চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় | চুলের যত্নে টিপস | hair care tips

চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় | চুলের যত্নে টিপস | hair care tips

চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় | চুলের যত্নে টিপস | hair care tips

ঘন লম্বা চুল কে না চায়? আর সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যউজ্জ্বল চুল পেতে হলে অবশ্যই সঠিকভাবে চুলের যত্ন নিতে হবে। আজকে সবকিছু.কম থেকে চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় এবং চুলের যত্নে টিপস  নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও এই সহজ টিপসগুলো ব্যবহার করে আপনিও পেতে পারেন স্বাস্থ্যউজ্জ্বল ঘন লম্বা চুল। 

ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন

চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় | চুলের যত্নে টিপস | hair care tips

নিতে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করলে চুল পড়া কমবে, চুলে সাইনি ভাব ফিরে আসবে। মেহেদি, মেথি,  অ্যালোভেরা, আমলকী, গ্রিন টি, পেঁয়াজ, অলিভ অয়েল, নারকেল তেল এই সব কিছুই চুলকে মজবুত স্বাস্থ্যউজ্জ্বল করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।


চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক

চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক

চুল মজবুত, লম্বা ও ঝলমলে করতে প্রোটিন হেয়ার প্যাক খুবই কার্যকরী। অনেকেই পার্লারে প্রোটিন হেয়ার ট্রিটমেন্ট করে থাকেন। প্রোটিন হেয়ার প্যাক চুল পড়া, নতুন চুল গজানো এবং চুলের অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধ করে। সময়ের অভাবে অনেকেই প্রোটিন চিকিৎসার জন্য পার্লারে যেতে পারেন না। তারা বাড়িতে কিছু প্রোটিন প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুন......

১। মধু হেয়ার প্যাক

অতিরিক্ত কন্ডিশনিং এবং সুপার হাইড্রেটিং হচ্ছে প্রাকৃতিক উপাদান মধু। এছাড়াও এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ। মধুর সাথে নারকেল, অ্যাভোকাডো বা বাদাম তেল মেশান। অতিরিক্ত কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করতে, ১ টেবিল চামচ পছন্দসই তেলের সাথে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে হালকা গরম করুন। তারপর এটি মাথার ত্বকে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা শাওয়ার ক্যাপ পড়ে থাকুন। আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন। চুল হবে ফ্লেক মুক্ত, মসৃণ এবং চকচকে।

২। ময়েশ্চারাইজিং হেয়ার প্যাক

চুল ময়েশ্চারাইজড রাখতে চাইলে খাদ্য তালিকায় প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বির পরিমাণ বাড়াতে হবে। এবং সাথে ময়েশ্চারাইজিং হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে হবে, যা চুলকে আর্দ্র এবং নরম রাখবে, সেই সাথে কার্যকরভাবে চুল ভাঙ্গা রোধ করবে। এর জন্য যা যা  লাগবে

১/৪ কাপ দই 

১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল

ভালো করে নেড়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এরপর ১৫ থেকে ৩০ মিনিট মাথায় লাগিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। দই চুল মজবুত করবে। চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে। আর অলিভ অয়েলের ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতাকে আটকে রাখবে। স্বাস্থ্যউজ্জ্বল ঘন লম্বা চুলের জন্য অলিভ অয়েলের উপকারিতা অনেক। এটি বিভিন্ন ড্যামেজ থেকে রক্ষা করবে আপনার চুল।

৩। গ্রিন টি হেয়ার প্যাক

যারা পাতলা চুল ঘন করতে চান, তাদের জন্য এই গ্রিন টি হেয়ার প্যাক। এতে থাকা ক্যাফেইন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ক্যাটেচিন মাথার ত্বক এবং লোমকূপের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ফলে চুল দ্রুত বাড়ে। এই হেয়ার প্যাকটি তৈরি করা হয় এক টেবিল চামচ গ্রিন টি পাউডারের সাথে সমপরিমাণ অলিভ অয়েল এবং একটি ডিম মিশিয়ে। পরিষ্কার চুলে সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন। প্রথমে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিন, ছোট ছোট অংশে ভাগ করে প্যাকটি গোড়ায় লাগান। মাথার ত্বকে ধীরে ধীরে লাগিয়ে নিন। ত্রিশ মিনিট পর শ্যাম্পু করুন।

৪। আপেল সিডার ভিনেগার হেয়ার প্যাক

তৈলাক্ত চুলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এটি দ্রুত তৈলাক্ত হয়ে যায়। তাই এমন হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে চান, যা মাথার ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ লেভেল বজায় রেখে চুলের কিউটিকলকে চকচকে ও মসৃণ করে তুলবে। সেক্ষেত্রে আপেল সিডার ভিনেগার হেয়ার প্যাক নির্দ্বিধায় ব্যবহার করুন। এর এক চতুর্থাংশ কাপ নিয়ে তাতে এক টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। লেবু যেমন চুলের তৈলাক্ততা দূর করবে, তেমনি মাথার ত্বকে জমে থাকা চুলের পণ্যের অবশিষ্টাংশও দূর করবে। মিশ্রণটি ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য মাথায় রাখুন। এ সময় শাওয়ার ক্যাপ পরা যেতে পারে। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না

৫। নারকেলের দুধ হেয়ার প্যাক

নারকেলের দুধ শুধুমাত্র চুলকে জটমুক্ত রাখে না, এটিকে ময়েশ্চারাইজডও রাখে। আর প্রোটিন-সমৃদ্ধ ডিম চুলকে কন্ডিশন রেখে চকচকে করে। প্যাকটি প্রস্তুত করতে প্রথমে আপনাকে একটি ডিম বিট করতে হবে। ১ কাপ নারকেল দুধ এবং এক টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করতে হবে। বাকিটা পুরো চুলে ঢেলে দিতে হবে। চুলের ডগায় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। মিশ্রণটি ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।

৭। পাকা কলা হেয়ার প্যাক

 ধুলো, সূর্যালোক বা ক্লোরিন - অনেক পরিবেশগত কারণ চুলের কোমলতা নষ্ট করে। জট পাকিয়ে তোলে। সেক্ষেত্রে অ্যান্টি-ফ্রিজ হেয়ার প্যাক হতে পারে আপনার সেরা বন্ধু। এটি একটি পাকা কলা পিষে এবং ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে তৈরি করা হয়। ব্লেন্ডিং করে নিলে আরও ভালো হয়। তারপর সারা চুলে লাগান। শাওয়ার ক্যাপ অবশ্যই পরতে হবে। বিশ মিনিট পর চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।

সপ্তাহে অন্তত একবার হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে ভুলবেন না। হেয়ার প্যাক তৈরি করেই  ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। বাসি হয়ে গেলে এর কার্যকারিতা অনেক কমে যায়।

আরও পড়ুন......


শ্যাম্পু করার পর চুলের যত্ন

শ্যাম্পু করার পর ঠিকমতো চুলের যত্ন না নিলে নিয়মিত তেল-শ্যাম্পু-কন্ডিশনার লাগালেও চুলের ক্ষতি হতে পারে। শ্যাম্পু করার পরপরই, চুলে প্রচুর আর্দ্রতা থাকে, এটি ভঙ্গুর এবং নরম থাকে এবং সামান্য টান লাগলেই ভেঙে যেতে পারে এবং পড়ে যেতে পারে। তাহলে জেনে নিন কীভাবে শ্যাম্পু করার পর আপনার মূল্যবান চুলের যত্ন নেবেন!

চুল শুকানোর সময় সতর্ক থাকুন

তোয়ালে বা তোয়ালে দিয়ে চুল মুছলে চুল ভেঙে যেতে পারে বা পড়ে যেতে পারে। তাই চুল শুকানোর জন্য সুতির ফ্যাব্রিকের তৈরি পুরনো টি-শার্ট বেছে নিন। একটি সুতির টি-শার্ট চুলের ক্ষতি না করে আলতো করে অতিরিক্ত জল শুষে নিতে পারে। বিশেষ করে আপনার যদি শুষ্ক চুল থাকে, তাহলে একটি সুতির টি-শার্ট দিয়ে চুল মুছলে আপনার চুল ময়েশ্চারাইজড থাকবে।

ব্লো ড্রায়ার এড়িয়ে চলুন

আমরা বলে থাকি যে হিট স্টাইলিং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুব খারাপ। কখনও কখনও হট স্টাইলিং ইভেন্ট বা বিবাহের জন্য যেতে পারে, কিন্তু এটি একটি অভ্যাসে জেনো রুপ না নেয় সেদিকে খেয়াল করতে হবে। শ্যাম্পু করার পর চুল ব্লো-ড্রাই করলে চুলের সমস্ত আর্দ্রতা চলে যাবে এবং চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যাবে। আর যেহেতু ভেজা চুল বেশি সংবেদনশীল তাই ভেঙ্গে যাওয়ার প্রবণতা থেকে যায়। তাই নির্দিষ্ট কারণ না থাকলে শ্যাম্পু করার পর ব্লো ড্রাই না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

স্মুথিং সিরাম ব্যবহার করতে হবে

চুলের রুক্ষতা, ফ্লাইওয়ে কমাতে এবং চুলকে মসৃণ ও নরম করতে হেয়ার সিরাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার চুলের ধরন অনুসারে একটি সিরাম বেঁছে নিন এবং শ্যাম্পু করার পরে এটি প্রয়োগ করুন। চুল অনেক নরম এবং চকচকে দেখাবে।

ভেজা চুল বাঁধবেন না

আগেই বলেছি, ভেজা চুল বেশি ভঙ্গুর, তাই শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুল বাঁধলে চুল পড়া স্বাভাবিক! ভেজা চুল বেঁধে চুলকানি এবং খুশকি হতে পারে। তাই চুল বাঁধার আগে চুল শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

চিরুনি ব্যবহার করবেন না

ভেজা চুল আঁচড়াবেন না। বরং আঙ্গুল দিয়ে ধীরে ধীরে সমস্ত চুলের জট খুলে ফেলুন। জট খোলার সময় চুল খুব জোরে টানবেন না। চুল আধা-শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, তারপরে একটি প্রশস্ত দাঁতযুক্ত চিরুনি দিয়ে আলতো করে আঁচড়ে নিন।


রাতে চুলের যত্ন

রাতে চুলের যত্ন


সারাদিনের পরিশ্রমের পর রাতে চুলের যত্নের নিয়ম ও রুটিন মেনে চললে চুলের স্বাস্থ্যের ক্ষতি রোধ করা সম্ভব। জেনে নিন কীভাবে রাতে চুলের যত্ন নিবেন।

আপনার চুলের স্বাস্থ্য ঘুমানোর আগে চুলের যত্নের ধরন এবং রুটিনের উপর নির্ভর করে। আপনার চুলের যত্নের রাতের রুটিনে কিছু বিষয় মেনে চললে আপনার চুল সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান হবে।

সারাদিন চুলে অনেক চাপ থাকে। সময়ের অভাবে বারবার চুল পরিপাটি রাখা সম্ভব হয় না। তখন জট পাকিয়ে যায়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই চুল ভালো করে আঁচড়াতে হবে। জট ছাড়ানোর জন্য একটি প্রশস্ত দাঁতযুক্ত চিরুনি ব্যবহার করুন। তাহলে চুলের গোড়ায় চাপ কম পড়বে।

চুল আঁচড়ানোর পর আলগা করে বেণি করে নিন। ঘুমানোর আগে চুলে তেল মালিশ করা যেতে পারে। রাতে চুলে তেল লাগালে চুলের গোড়া মজবুত হয়। পরের দিন সকালে শ্যাম্পু করতে হবে। তেল পছন্দ না হলে তেলের পরিবর্তে সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে। সিরাম চুলের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে।

ভালো ফলাফলের জন্য ঘুমানোর সময় চুলের চারপাশে সিল্ক বা সাটিন কাপড় বেঁধে নিন। যদি এগুলোর কোনোটিই সম্ভব না হয়, তাহলে আপনি সাটিন বা সিল্ক কাপড়ের বালিশে ঘুমাতে পারেন। এভাবে বালিশে ঘর্ষণে চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়ার বা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

ভেজা বা ভেজা চুল নিয়ে ঘুমাতে যাবেন না। এতে চুল ভেঙে যেতে পারে। কারণ চুল ভেজা অবস্থায় সবচেয়ে ভঙ্গুর হয়। ঘুমের আগে চুল ধুতে চাইলে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে তারপর ঘুমান। ভেজা চুলে ঘুমালে ঠাণ্ডা লাগার আশঙ্কা থাকে।

আরও পড়ুন......


চুলের যত্নে টিপস | hair care tips

চুলের যত্নে টিপস | hair care tips


১। নিয়মিত সঠিকভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন

২। সঠিকভাবে শ্যাম্পু করুন

৩। একই কোম্পানির অনুরূপ হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন

৪। অতিরিক্ত হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন

৫। চুল শুকানোর ক্ষেত্রে আলতোভাবে তোয়ালে ব্যবহার করুন 

৬। আঁটসাঁট করে চুল বাঁধা বন্ধ করুণ

৭। সিল্কের বালিশের কভার ব্যবহার করুন

৮। সপ্তাহে ২ দিন হট অয়েল মাসাজ নিন

৯। ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করা ভালো

১০। নিয়মিত হেয়ার ব্রাশ করুন

১১। সপ্তাহে ১ দিন চুলে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন

১২। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।

১৩। সূর্যের আলো, রোদ, বৃষ্টি  থেকে চুল সুরক্ষিত রাখুন


এই আর্টিকেলে লেখা চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় এবং চুলের যত্নে টিপস মেনে চললে আপনিও স্বাস্থ্যউজ্জ্বল ঘন লম্বা চুলের অধিকারী হতে পারেন। তবে নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। অপরিষ্কার চুল মাথার ত্বককে দুর্বল করে দেয়। ফলে খুশকি বা চুল পড়ার মতো সমস্যা থেকে যায়। অবশ্যই প্রতি রাতে  চুলের সঠিক যত্ন নিয়ে ঘুমাতে যান

যদি আমাদের লেখাটি ভালো লাগে তবে শেয়ার করে আমাদের পাশে থাকুন।




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url